অগ্রণী ব্যাংকের পদোন্নতি জটিলতায় মেধাবীদের আসতে অনীহা!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: সোমবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩, ৭:২২ পিএম
|
![]() এক সময় অগ্রণী ব্যাংকের নাম শুনলে চাকরি প্রার্থীদের পছন্দের তালিকায় এক নম্বরে থাকতো । এখন তার উল্টো চিত্র দেখা গেছে। ব্যাংকটির পদোন্নতি জটিলতার প্রভাব পড়েছে নতুন কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে ! ২০২২ সালে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির ভাইবাবোর্ডে সবচেয়ে অপছন্দের তালিকায় ছিল অগ্রণী ব্যাংক। আর পছন্দের তালিকায় সবচেয়ে এগিয়ে ছিল সোনালী ব্যাংক। জানাযায়, গত ৫ ডিসেম্বর অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ড কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বিষয়ক অর্গানোগ্রাম বৃদ্ধি করে একটি নীতিমালা অনুমোদন করে। ওই নীতিমালা অনুমোদনের আলোকে বোর্ড থেকে এইচআরপিডিকে ব্যবস্থা নিতে মেমো দেয়া হয়। বোর্ড রুমের মেমো পাওয়ার পর এইচআরপিডি ৭ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র অফিসার থেকে ডিএমডি পর্যন্ত ২৮৫৪টি পদ বৃদ্ধির জন্য অনুমোদন চেয়ে একটি পত্র প্রেরণ করে । ওই পত্র প্রেরণের আলোকে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অগ্রণী ব্যাংকের একটি সংশোধনী দেয়। উক্ত সংশোধনীর প্রশ্নের উত্তর ফোনে ও লিখিত আকারে জানায় গত ১৪ ডিসেম্বর। বিগত ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি অর্থ মন্ত্রণালয়। অগ্রণী ব্যাংকের অর্গানোগ্রামের ওই চিঠিতে অফিসার থেকে সিনিয়র অফিসার ১৬১৪ উপরে পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। সিনিয়র অফিসার থেকে প্রিন্সিপাল অফিসার ৮০২ পদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রিন্সিপাল অফিসার থেকে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ৩৪১টি পদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এজিএমে বৃদ্ধি করা হয়েছে ৪৭ পদ এবং এক জন ডাক্তারকে এজিএম সম মর্যাদার করা হয়েছে। এতে এজিএমের পদ মোট ৪৮ করা হয়েছে। ডিজিএমে ৪২টি পদ বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং জিএমে ৬ টি, ডিএমডি ১টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে । অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম এই পদোন্নতির জটিলতা তৈরি করে। এখানে পদোন্নতি জটিলতায় ১০ থেকে ১২ বছর ধরে একই পদে আটকে রয়েছেন কর্মকর্তারা। এই জট নিরসনের জন্য নতুন অর্গানোগ্রাম দ্রুত মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলে পাশ করে নিয়ে আসা। যেমন করেছে সোনালী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের অর্গানোগ্রাম ক্ষেত্রে। তা না হলে অগ্রণী ব্যাংকে চেইন অফ কন্টোল ভেঙ্গে পড়বে। আবারও ক্ষুব্ধ হয়ে কর্মকর্তারা বিক্ষোভ করতে পারেন। অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ শামস-উল ইসলামের শেষ কর্ম দিবসে সুপারনিউমারারি পদোন্নতির দাবিতে অবরুদ্ধ করে রাখে কর্মকর্তারা। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান কর্মকর্তাদের সুপারনিউমারারি পদোন্নতি বাস্তবায়ন করবেন, না হয় তিনি তার পদ থেকে সরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ওই কথার সম্মান জানিয়ে সাবেক এমডিকে সেই যাত্রায় ছাড় দেয় ক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা। কোন এক অদৃশ্য শক্তির কারনে মন্ত্রণালয় সুপারনিউমারারি পদোন্নতি বন্ধের এক চিঠি দেয়। ওই চিঠি দেওয়ার পরে অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তারা রাতভর সুপারনিউমারারি পদোন্নতির দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির হেড অফিসে আন্দোলন করেন। পরবর্তীতে আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের বর্তমান এমডি নতুন অর্গানোগ্রাম পাশ করে দ্রুত পদোন্নতির দেওয়ার আশ্বাস দেন। ওই আশ্বাসের কারনে কর্মকর্তারা তাদের আন্দোলন থেকে সরে আসেন । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, অগ্রণী ব্যাংকের পদোন্নতির এই জটিলতার খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও জাতীয় দৈনিকে ফলাও করে ছাপা হয়েছে । এতে নতুন কর্মকর্তারা তাদের ভাইবাবোর্ডে পছন্দের তালিকার এক নম্বরে রাখে সোনালী ব্যাংকে। আর তারা অপছন্দের তালিকায় অগ্রণী ব্যাংকে রেখেছেন বলে জানাগেছে। সোনালী ব্যাংকে পছন্দের তালিকায় সেরা রাখার কারন হলো ওই প্রতিষ্ঠানে কোন পদোন্নতি জটিলতা নেই। পদোন্নতি জটিলতা নিরসনের জন্য ব্যাংকটির সাবেক এমডি আতাউর রহমান প্রধান সুপারনিউমারারি পদোন্নতি দিয়েছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, এভাবে দিনের পর দিন অগ্রণী ব্যাংকে পদোন্নতি জটিলতা চলতে থাকলে মেধাবীরা এই ব্যাংকে আর আসবে না। এতে ব্যাংকটি এক সময় মেধাবী কর্তকর্তাদের সংকটে ভুগবে। |